আমুদরিয়া নিউজ : প্রায় ১১বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল দুজন সমকামী থাই অভিনেতা আপিওয়াত পোশ ও আর্মের একটি ভিডিও যেখানে একজন আরেকজনকে হাঁটু গেড়ে বসে প্রেম নিবেদন করেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয় অজস্র বুলিং। নানা লোকে নানা ভাবে মন্তব্য করেন তাদের উদ্দেশ্যে।
আরও একটি ঘটনা বলা যাক কারসিয়া ও নিরামন। এই থাই লেসবিয়ান দম্পতির দুজনেই অফিসে কর্মরতা। তারা অবিবাহিত। তবে ৪ বছর ধরে একসাথে থাকেন। দুজনেই সম্পত্তির জন্য একসাথে টাকা জমান। কিন্তু, দলিলগুলি কারসিয়ার নামেই ছিল। কারণ, থাই আইন অনুযায়ী অবিবাহিত দম্পতির দুজনেই একটি সম্পত্তির মালিক হতে পারবেন না। এই কারণে কারসিয়ার বাবা তাদের বিয়ের স্বীকৃতি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। এর জেরে বাবার সাথে কারসিয়ার তর্কও হত। কারসিয়ার মতে, ভালবাসা মানে অন্য লিঙ্গের সাথে বিয়ে নয় আর ভালবাসা জরুরি বিষয় কিন্তু অধিকার গুলোও যাতে সকলেই সমান ভাবে পায় এটাও দেখা দরকার।
ওপরের ঘটনা দুটিতে উভয় দম্পতিই স্বপ্ন দেখত, কবে তাদের ভালবাসা স্বীকৃতি পাবে? কবে থেকে তাদের আর সোশ্যাল মিডিয়ায় বুলিং এর শিকার হতে হবে না? কবে তাদের দেশও তাদের এই ভালবাসায় সম্মতি দেবে?
আর অবশেষে থাইল্যান্ড সরকার সেই সম্মতিতেই সিলমোহর বসাল। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে কার্যকর হল সমলিঙ্গ বিবাহ আইন। ২০২৪ এর জুনে বিলটি পাশ হয়। সেপ্টেম্বরে থাই রাজা বিলটি অনুমোদন করেন। সম্প্রতি আইনটি কার্যকর হয়েছে। ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডস প্রথম সমলিঙ্গের বিয়ের অনুমোদন দেয়। এর পর ৩০টির বেশি দেশ সমলিঙ্গের বিয়েকে বৈধতা দিয়েছে। তবে, ভারত বা আমেরিকার মতো দেশ এই আইনে সম্মতি দেয়নি। তাইওয়ান ও নেপালের পর এশিয়ার তৃতীয় দেশ হিসেবে থাইল্যান্ডে এই বিল পাস হল। আইনটি কার্যকর হওয়ার পর পরই থাইল্যান্ডের এক সুপরিচিত সমলিঙ্গের জুটি বিয়ে করেছেন।
সংবাদ সূত্রে জানা যায়, আইনটি কার্যকর হওয়ায় দেশটির শত শত সমলিঙ্গের জুটি বিয়ে করতে চলেছেন। থাইল্যান্ডের একটি বিশাল রিসর্টে এই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে। বিয়ে হল, স্বামী স্ত্রীর পবিত্র বন্ধন। একজন নারীর জন্যেই পুরুষ আর পুরুষের জন্যেই নারীর সৃষ্টি হয়েছে। এমন বহু প্রচলিত কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। এবার সেই প্রচলিত কথায় বিরতি টানল থাইল্যান্ডও। তারা মনে করে, পাশের মানুষটি যদি সৎ ও বিশ্বাসী হয়, তা হলে সকলেই জীবনসঙ্গী হওয়ার যোগ্য। সহজ কথায়, পুরুষের জন্য পুরুষ কিংবা নারীর জন্য নারী থাকাটা দোষের নয়, বলে অনেকে মনে করেন।
প্রতিবেদক : শিউলি ভট্টাচার্য