আমুদরিয়া নিউজ : ইরানের অতি পরিচিত মানবাধিকার কর্মী কিয়ানোস সানজারি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে লিখেছিলেন, বুধবার সে দেশের সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সেখানে জেলে বন্দি ৪ জন মানবাধিকার কর্মীকে মুক্তি না দিলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। নির্দিষ্ট সময় পেরোনোর পরে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন। এবং মৃত্যুর আগে তিনি সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লিখে গিয়েছেন, একদিন ইরানিরা জেগে উঠবে এবং দাসত্বের শৃঙ্খল ছিন্ন করে বেরোবে বলে তিনি আশা করেন।
সানজারি ইরানের তালিবান সহ কট্টরপন্থী রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের কঠোর সমালোচক ছিলেন। তিনি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিশ্বাসী মানুষ ছিলেন। তিনি মনে করতেন, কারও মতপ্রকাশের জন্য তাকে বন্দি করা উচিত নয়।
তিনি মৃত্যুর আগে যে পোস্টে আত্মহত্যার কথা লিখেছিলেন, তাতে ফাতেমে সেফহারি, নাসরিন সকরামি, তোমায়াজ সালাহি এবং আরসাম রেজায়িকে মুক্তি দিতে বলেছিলেন। তিনি খোমেইনি ও তাঁর সহযোগীদের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আত্মহত্যা করবেন বলেও লিখেছিলেন।
ইরানে মাশা আমিনির মৃত্যুর পর সে দেশে বিপুল বিক্ষোভ হয়েছিল। সেই বিক্ষোভে সামিল হওয়ার জন্য ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
মাশা আমিনি ছিলেন ২২ বছর বয়সী স্বাধীনচেতা এক নারী। যিনি ২০২২ পুলিশ হেফাজতে মারা যান। তা নিয়ে প্রতিবাদ করেন মানবাধিকার কর্মী সানজারিও। সানজারি ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে অনেকবার গ্রেফতার হন, ছাড়াও পান।
২০০৭ সালে তিনি ইরান থেকে চলে যান নরওয়েতে। সেখানে আশ্রয় নেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকার পার্সিয়ান বিভাগে যোগ দেন। কিন্তু ২০১৬ সালে তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকার জন্য ইরানে ফেরত আসলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ও দেশটির ইভিন কারাগারে ১১ বছরের জন্য কারাবাসের আদেশ দেওয়া হয়।
ইরানের তাজরিশে অবস্থিত ওই কারাগারে প্রধানত রাজনৈতিক বন্দিদের রাখা হয়। তবে ২০১৯ সালে তিনি চিকিৎসার কারণে জামিনে মুক্তি পান এবং পরবর্তীতে একটি মনোরোগ হাসপাতালে ভর্তি হন।
তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমে বলেছিলেন যে তাকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছিলো, একটি বিছানায় শিকলবন্দি করা হয়েছিল এবং তার শরীরে বিভিন্ন পদার্থ ইনজেক্ট করা হয়েছিল। বিবিসির সূত্রের এই খবর জানা গিয়েছে।