আমুদরিয়া নিউজ :
বি টি এস (BTS)!
এই বিটিএস নামটির সাথে হয়তো কমবেশি সবাই পরিচিত। কিন্তু, এরা কারা সেই ডিটেলস সকলের নাও জানা থাকতে পারে। তা নিয়ে আমুদরিয়া নিউজে শুরু হচ্ছে ধারাবাহিক। আজ প্রথম পর্ব।
BTS
এদের আমরা বাংটান বয়েজ বলেও জানি। প্রথমেই জানাই বিটিএস মানে কি!
বিটিএস এর অর্থ কোরিয়ান ভাষায় “বাং টান সোনেওন্দান”। যার মানে বুলেট প্রুফ বয় স্কাউট। গ্রুপের মেম্বার জে হোপ বলেছেন, বয়ঃসন্ধি থেকে যৌবনের যে জার্নি, সে সমযে সমাজের ধরাবাঁধা প্রত্যাশা থাকে তাদের প্রতি। সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে কারও দমবন্ধ হয়ে যায়। কেউ পারে না। কেউ হাঁপিয়ে ওঠে। এই ধরাবাঁধা, ছকে বাঁধা প্রত্যাশাগুলোকে আটকে দেওয়ার কথা ভেবেই বুলেটপ্রুফ স্কাউট বা বিটিএসের জার্নি শুরু। বিটিএস বালক-বালিকা থেকে যুবক-যুবতী হয়ে ওঠার জার্নিটা যাতে গতে বাঁধা না হয়, বরং ক্রিয়েটিভ হয়ে ওঠে সেটাই চায়। তাই বিটিএসের উদ্দেশ্য।
সাউথ কোরিয়ান এই বয় ব্যান্ড গ্রুপ ২০১০ সালে তৈরি হয়। এর সদস্য সংখ্যা ৭, যারা হলেন জিন, শুগা, জে-হোপ, আরএম, জিমিন, ভি এবং জাংকুক। আজকের আলোচনা হল, কিভাবে এই কে-পপ গ্রুপ সারা বিশ্বকে মাতিয়ে দিয়েছে।
ইউনিসেফ এর লাভ মাইসেল্ফ ও #এন্ডভায়োলেন্স ক্যাম্পেইন এ যোগ দিয়েছিল বিটিএস।
সেখানে এই গ্রুপের লিডার কিম নামজুন ওরফে আরএম তাঁর বক্তৃতায় বলেছিলেন, “আমরা যেমন নিজেদের ভালবাসতে শিখেছি। একইভাবে আমাদের এখন নিজেদের হয়ে বলা শিখতে হবে।”
এ বিষয়ে বলে রাখা ভালো, কিম নামজুন আগাগোড়াই তাদের ফ্যান মানে আর্মিদের অনুপ্রেরণা জুগিয়ে থাকেন। তাঁর একেকটি বক্তৃতা, একেকটি বক্তব্য তরুণ সমাজকে উদ্দীপ্ত করে চলেছে।
বিটিএস নানাভাবে তাদের ফ্যানদের উদ্দীপ্ত করে চলেছে।
ইউনিসেফের এই ক্যাম্পেনের জন্য বিটিএস টাকা তুলে সারা বিশ্বের শিশুদের মধ্যে ভালবাসা ও সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিটিএস। সারা বিশ্বে ঘটে যাওয়া শিশু নির্যাতন এবং শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে বিটিএস।
এই ক্যাম্পেন বলে, একে অন্যকে সাহায্য করলে পৃথিবী বদলে যেতে পারে।
শুধুমাত্র গ্রুপওয়ার্কই নয়, ব্যক্তিগতভাবেও বিটিএস গ্রুপের সদস্যদের অনুদান প্রচুর।
শিক্ষাকে গুরত্বপূর্ণ মনে করেন বিটিএসের আরএম সোউল। তিনি স্যামসাং স্কুলে অনুদান দিয়েছেন। এই স্কুলটি বধির শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য খ্যাত। এ ছাড়াও তিনি সাউথ কোরিয়াতে সঙ্গীত শিক্ষার জন্য অনুদান করেন।
পার্ক জিমিনও তাঁর জন্মস্থল বুসানের শিক্ষামূলক প্রোগ্রামগুলোতে অনুদান দেন। এ ছাড়াও তিনি ২০১৯ সালে গোটা শহরের স্কুলগুলিতে দান করেছিলেন। ২০১৬-২০১৮ সালের মধ্যে তিনি বুসান হোদং এলিমেন্টারি স্কুলের শিশুদের ইউনিফর্ম কিনে দেন।
জং হোসক ওরফে জে-হোপ ব্যক্তিগতভাবে চাইল্ড ফান্ড কোরিয়াতে বেশ কয়েকবার দান করেছেন। এই সংস্থাটি মুক ও বধির শিশুদের সাহায্য করে। ২০২১ সালে কোভিড-১৯ এর সময় দরিদ্রদের জন্য তিনি তাঁর ২৭ তম জন্মদিনে ১৫০ মিলিয়ন ওন দান করে দেন। কিম সোকজিন ওরফে জিন ইউনিসেফের কোরিয়া অনার ক্লাবের সদস্য হিসাবে বহুবার বড় মূল্যের অনুদান করেছেন, যা আর্মিদেরও ইউনিসেফে ডোনেট করতে অনুপ্রাণিত করে।
নিজের ২৫ তম জন্মদিনে, মিন ইয়ুঙ্গি ওরফে শুগা দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে ৩৯ টি অনাথ আশ্রমে বিফ দান করেছিলেন এবং সে বছরই তিনি ক্যান্সার ও লিউকেমিয়া রোগী শিশুদের মধ্যে টাকা ও খেলনা বিলিয়ে দেন।
এসব দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সে দেশের ফ্যান মানে আর্মিরাও দলবদ্ধভাবে অনেক প্রজেক্টে কাজ করেছে। বিটিএস এর ৬ বছর বার্ষিকীতে সেনাবাহিনী সিঙ্গাপুরে এবং গাঙ্গওন এ বিটিএস এর নামে নানা জনকল্যাণমূলক কাজে যুক্ত হন।
বিটিএস নানাভাবে সারা বিশ্বকে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টিতে এবং একসাথে সমাজকে নতুনরূপে গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করেই চলেছে। (চলবে)
প্রতিবেদক: সন্ধ্যা দত্ত
ইংরেজি অনার্সে স্নাতক, কনটেন্ট রাইটার