আমুদরিয়া নিউজ : একজন ধর্মগুরু নিজের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ঘর-সংসার করতে পাঠিযেছেন, অথচ অন্যের মেয়েকে মাথা ন্যাড়া করে সন্ন্যাসিনী হতে পরামর্শ দিচ্ছেন কেন, সেটা বুঝতে চেয়ে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিযেছে মাদ্রাস হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ পেয়েই একজন অতিরিক্ত পুলিশের সুপারের নেতৃত্বে প্রায় ১৫০ জন পুলিশ অফিসার কোয়েম্বাটোরের কাছে থোন্ডামুথুরের ইশা ফাউন্ডেশনের আশ্রমে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। মঙ্গলবার ওই পুলিশ অফিসাররা আশ্রমে যান। তাঁরা আশ্রমের আবাসিকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন। তার পরে ৪ অক্টোবর হাইকোর্টে তাদের রিপোর্ট দিতে হবে। ইশা যোগ সেন্টারের পক্ষে এক বিবৃতিতে সংবাদ সংস্থাকে জানানো হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশ এসে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক, আশ্রমিকদের জীবনযাপন, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি নিয়ে কথাবার্তা বলেছে।
মাদ্রাস হাইকোর্ট কেন এমন নির্দেশ দিল!
সেখানকার বাসিন্দা এস কামরাজ উচ্চ আদালতে হিভিয়াস করপাস পিটিশন ফাইল করেন। তিনি সেখানে জানান, তাঁর দুই মেয়ে গীতা (৪২) ও লথা (৩৯) যোগ শিখতে গিয়েছিল আশ্রমে। সেখানে তাঁদের ব্রেন ওয়াশ করে সন্ন্যাসিনী হওয়ার পরামর্শ দেয়। দুজনে এখন সেখানেই থাকে। বাবা গেলেও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। কামরাজের অভিযোগ, তাঁর মেয়েদের জবরদস্তি সন্ন্যাসিনী করা হয়েছে। তিনি ওই আশ্রমের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পসকো ধারায় অভিযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এমনকী, আশ্রমের কর্ণধার ধর্মগুরুর মেয়ে বিয়ে করে সুখে ঘর-সংসার করলেও অন্য পরিবারের মেয়েদের কেন সন্ন্যাসিনী হতে বলা হচ্ছে সেই প্রশ্নও তুলেছেন। তাঁর দুই মেয়েই উচ্চশিক্ষিত। একজন ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করেছে চাকরি করতেন সেখানে। আরেকজনও ইঞ্জিনিয়র।
হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে দুই মেয়ে অবশ্য বলেছে, তাঁরা স্বেচ্ছায় আশ্রমে রয়েছেন। তাঁরা সকলের উন্নতির জন্য সন্ন্যাস নিয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি তাঁদের প্রশ্ন করেন, সকলের সুখের জন্য সন্নাস নেওয়ার কথা বললেও বাবা-মায়ের সুখ-দুঃখের দিকে নজর দেওয়া উচিত নয় কি!
এর পরেই হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ওই আশ্রমে গিয়ে বিশদে সকলের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এটা স্পষ্ট করতে হবে যে আশ্রমের ধর্মগুরু নিজের মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, সে ঘর-সংসার করছে অথচ অন্য পরিবারের মেয়েদের মাথা ন্যাড়া করে সন্ন্যাসিনী হওয়ার পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন! আশ্রমের পক্ষ থেকে মামলাকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি আশ্রমকে বদনাম করার চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে করে চলেছেন।
এখন কি রিপোর্ট পেশ হয়, উচ্চ আদালত তার প্রেক্ষাপটে কি নির্দেশ দেয় সেটাই দেখার বিষয়।