আমুদরিয়া নিউজঃ হাড়হিম করা কান্ড কোচবিহারে। বৃদ্ধ বাবাকে খুন করে লাশ কম্বলে মুড়ে ঘরের আলমারিতে লুকিয়ে বেপাত্তা ছেলে। ওই দেহ উদ্ধার করার পর সেই বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে হদিস মিলল কয়েক মাস নিখোঁজ থাকা পিসতুতো দাদার পঁচাগলা দেহ। একই বাড়ির থেকে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। সোমবার এই ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কোচবিহার ১ নং ব্লকের ডাউয়াগুড়ি গ্রামের বৈশ্য পাড়ায়। খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থলে আসেন কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণ গোপাল মিনা, ডিএসপি হেডকোয়ার্টার চন্দন দাস, কোতয়ালী থানার আইসি তপন পাল ও অন্যান্য আধিকারিকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাউয়াগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বৈশ্য পাড়ায় বাবা বিজয় বৈশ্য ও ছেলে প্রণব বৈশ্য থাকতেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিদিন রাতে নেশাগ্রস্ত ছেলে বাবাকে মারধর করত। গতকাল রাতেও তার বাবাকে মারধর করে ছেলে প্রণব। প্রতিবেশীরা আটকাতে গেলে তাদের দিকে দা নিয়ে তেড়ে আসে ছেলে। সোমবার সকাল থেকে তার কোন হদিশ নেই। তবে এদিন এক মাছ বিক্রেতাকে প্রণব ফোন করে তার বাড়িতে মাছ দিয়ে যেতে বলেন। মাছ নিয়ে ওই বিক্রেতা বাড়িতে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। দরজার সামনে তিনি রক্তের দাগ দেখতে পান এবং সেখানে একটি চিঠি পান বলে দাবি করেছেন। ওই মাছ বিক্রেতা জানান,সেই চিঠিতে বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাচ্ছে বলে লেখা ছিল। তবে রক্ত দেখে তার মনে সন্দেহ জাগে। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের বিষয়টি জানান। এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এস আলমারি ভেঙে বিজয় বৈশ্যের দেহ উদ্ধার করে। এই দেখে এলাকাবাসীর মনে সন্দেহ হয়, তার পিসতুতো দাদা গোপাল রায়ের সঙ্গেও হয়তো কোন ঘটনা ঘটিয়েছে প্রণব। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ মিলে বাড়ির চারদিকে তল্লাশি চালায়। সেই সময় বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কের প্লাস্টারের কিছু অসঙ্গতি দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। এরপর ওই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ থাকা পিসতুতো দাদা গোপাল রায়ের পঁচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, তারা খবর পেয়ে প্রথমে বিজয় বৈশ্যের দেহ উদ্ধার করেন। ওই দেহ উদ্ধার করতে এসে পরে তারা প্রণব বৈশ্যের পিসতুতো দাদা গোপাল রায়ের মৃতদেহের হদিশ পান। দেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সমস্ত কিছু তদন্ত করে দেখা হবে। ফরেন্সিক টিম সব নমুনা সংগ্রহ করবে।