আমুদরিয়া নিউজ : শিলিগুড়িতে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ছিল প্রায় ভোর ৫টা অবধি। কিন্তু, বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মহালয়ার ভোরে তর্পণ করতে মহানন্দা নদীর ধারে উপচে পড়ল ভিড়। বুধবার ভোর থেকে সকাল ৭টা অবধি মহানন্দার ঘাটের ছবিটা এমনই। ছোটখাট মেলাও বসেছে সেখানে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য প্রচুর পুলিশ পাহারার বন্দোবস্ত হয়েছে। বিশেষত, মহিলাদের ভিড়ের মধ্যে রয়েছে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশও।
মহালয়ার দিন পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রীতি প্রচালিত। এদিনই দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। শিলিগুড়ির লালমোহন মৌলিক নিরঞ্জন ঘাটে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এসেছিলেন তর্পণে অংশ নিতে। শিলিগুড়ির হায়দারপাড়া থেকে আসা রমেন মল্লিক জানান, তিনি এ বছর প্রথম মহানন্দার ঘাটে তর্পণ করলেন। গত বছর তার বাবা মারা যান। শিলিগুড়ির আশ্রমপাড়ার নমিতা পোদ্দার জানান, তাঁর পরিবারের লোকজন পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তির কামনার জন্য প্রতি বছরই এটি করে থাকেন।
একজন চিকিৎসক দম্পতি জানান, প্রতি বছরই তারা এই মহানন্দার ঘাটে তর্পণ দেখতে আসেন। মা আসছেন এটাই ভেবে তাঁদের খুবই আনন্দ হচ্ছে। তবে বর্তমানের পরিস্থিতি মাথায় রেখে তিনি বলেন, সমাজের মানুষকে আরো সুস্থ মানসিকতার হতে হবে। মেয়েরা যাতে অত্যাচারিত না হয় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
আসলে মহালয়ার ভোর মানেই একটা অন্যরকম ব্যাপার। শিলিগুড়ির নানা এলাকার মানুষ দলে দলে ভিড় করেন মহানন্দার ঘাটে। হিলকার্ট রোডের মহানন্দা সেতুর নিচে জলে পা দেওয়ার জন্য ঠেলাঠেলি করতে হয়। এবারও সেই দৃশ্যের ব্যতিক্রম হয়নি। পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে তর্পণের চিরচেনা ছবিটি এখনও যে অম্লান সেটাই ফের স্পষ্ট হয়ে গেল এদিনও।