আমুদরিয়া নিউজ : আর্টিফিসিযাল ইন্টেলিজেন্স মানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির অন্যতম উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত জেফরি এভারেস্ট হিনটন এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। অকত্যন্ত সাদাসিধে জীবন যাপন করেন তিনি। যে সময়ে তিনি নোবেল জয়ের খবর পেয়েছেন, তখন তিনি এম আর আই করানোর জন্য ক্যালিফো্রনিয়ার একটি সাধারণ মানের হোটেলে বসেছিলেন। যে হোটেলে ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ওয়াইফাই অবধি নেই। তিনি সংবাদ সংস্থাকে জানান, তিনি এটা আশাই করেননি। তাঁর কথায়, আমি শুধু কাজ করতে ভালবাসি, সে জন্য নোবেল পাব ভাবিনি। আমি স্তম্ভিত। তিনি জানান, যে হোটেলে বসে খবরটা পেলাম, সেটি সাধারণ মানের এবং ইন্টারনেট সংযোগও নেই। ওয়াইফাই কাজ করে না ঠিকঠাক।
তিনি বলেন, আমি এমআরআই করাব বলে হোটেলে রয়েছি, সেটা আর এদিন করা হল না। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য এ বছর পদার্থবিদ্যায় হিনটনের পাশাপাশি নোবেল জিতেছেন জন জে. হপফিল্ড। তাদের এ উদ্ভাবন কম্পিউটারকে মানব মস্তিষ্কের মতো ভাবতে সহায়তা করে। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের ওপর ভিত্তি করে মেশিন লার্নিং বর্তমানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি দুনিয়ায় ও দৈনন্দিন জীবনে বিপ্লব এনে দিয়েছে।
নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী হিনটন বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমি মনে করি এটি মানবসভ্যতায় বিরাট প্রভাব ফেলবে। যা শিল্প বিপ্লবের মতো হবে। তবে শারীরিক ক্ষমতার বিপরীতে এটি বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতায় মানুষের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। মানুষের চেয়ে বুদ্ধিমান হতে পারে, এমন কিছুর অভিজ্ঞতা আমাদের হয়নি এবং এটি অনেক ক্ষেত্রেই অসাধারণভাবে কাজ করবে। এটি আমাদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিতে সহায়তা করবে। প্রায় সব শিল্পেই এটি মানুষকে আরও দক্ষ করে তুলবে। এআইয়ের সাহায্যে মানুষ অনেক কম সময়ে একই কাজ করতে পারবে।
তবে এ আইয়ের খারাপ দিকও মনে করিয়েছেন তিনি। হিনটন বলেন, উৎপাদনশীলতায় বিশাল উন্নতি আনতে পারে এআই। কিন্তু কিছু ক্ষতিকর দিক নিয়েও আমাদের উদ্বিগ্ন থাকতে হবে। বিশেষ করে এ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে।
১৯৪৭ সালে এক সমৃদ্ধ পরিবারে জন্ম নেওয়া হিনটন বর্তমানে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। ‘হপফিল্ড’ নেটওয়ার্কের ওপর ভিত্তি করে এক নতুন নেটওয়ার্ক তৈরি করেন এ কম্পিউটার বিজ্ঞানী, যা দ্য বোল্টজম্যান মেশিন হিসেবে পরিচিত।