আমুদরিয়া নিউজ : বাতি-ব্যাগ! এ এমন একটা ব্যাগ যাতে বই সহ পড়াশোনার সব সরঞ্জাম রাখা যাবে। আবার ব্যাগে এমনভাবে সোলার ব্যাটারি বসানো রয়েছে, যাতে দিনের বেলায় সূর্যের আলোয় তা চার্জ হয়ে যাবে। রাতে সেই ব্যাগই আলো দেবে। মানে ব্যাগ-বাতি হয়ে যাবে। আর সেই ব্যাগ বাতি জ্বেলে লেখাপড়ার কোনও অসুবিধেই হবে না।
এই ব্যাগ-বাতি যে কোম্পানি বানিয়েছে তার সিইও জেমস বড় হয়েছেন আফ্রিকার তানজানিয়ায়। মনে রাখতে হবে, আফ্রিকার এখনও অনেকটাই অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। সেখানে অনেক প্রত্যন্ত এলাকাতে এখনও পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। নেই সৌরবাতির ঠিকঠাক ব্যবস্থা। কেরোসিন তেলের দামও আকাশছোঁয়া। অসহায় দেশের মানুষেরা আলোর খোঁজে হাহাকার করেন। না শুধু দেশেই নয় তাদের জীবনেও এই আলোর ভীষণ অভাব।
তবে সেই আফ্রিকার তানজানিয়ায় অন্য আলোর দিশা দিতে আসরে জেমস, মানে জেমসের ব্যাগ কোম্পানি। যে কোম্পানির নাম সোমা। সোমা ব্যাগ কোম্পানি। তানজানিয়া প্রদেশের মানুষকে আলো দেখাতে গত বছর থেকে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন ওই কোম্পানির মালিক জেমস। তানজানিয়া তথা আফ্রিকার ছাত্রদের হাতে সোলার চার্জিং ব্যাগ তুলে দিয়েছে এই কোম্পানি। কি এই সোলার চার্জিং ব্যাগ?
সোমা কোম্পানির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, তারা এমন ব্যাগ বানিয়েছে, যা দিনের বেলা সূর্যের আলোয় চার্জ হবে এবং রাতে তাতে আলো জ্বলবে। এই আলোয় রাতে ছাত্ররা পড়াশোনা করতে পারবে। চড়া দামে কেরোসিন কিনে বাতি জ্বালিয়ে যাতে তাদের পড়াশোনা করতে না হয় তাই এই উদ্যোগ নিয়েছে কোম্পানিটি। গত বছর থেকে প্রায় ৩৬০০০ এর ও বেশি ব্যাক প্যাক বিক্রি করেছে তারা।
সংবাদ সংস্থা সি এন এন কে জেমস জানিয়েছেন, যে তিনি তানজানিয়াতেই বড় হয়েছেন। ছোট থেকেই আলোর অভাবে সমস্যা পড়েছেন তিনি। আলোর অভাবে অনেকে কলেজে পৌঁছে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে বলে দেখেছেন তিনি। অনেককে পড়াশোনা ছেড়ে ভিডিও গেম সেন্টার, কাফেতে সময় কাটাতে দেখেছেন তিনি। একটা সময়ে জেমসকেও পড়াশোনা ছাড়তে হয়। তার পরে টিউশন করে টাকা জমিয়েছেন। তৈরি করেছেন একটি ছোট লাইব্রেরি। যা বহু গ্রামের শিশুকে আকৃষ্ট করে।
কিছুদিন আগে তিনি ওই ব্যাগ তৈরি করিয়েছেন তিনি। পড়াশোনার জন্য তার এই অভিনব উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে আফ্রিকায়। তবে জেমস সি এন এন কে জানিয়েছেন শুধু মাত্র আফ্রিকাতেই নয়, সমগ্র বিশ্বের অভাবী শিশুদের হাতে তিনি তার এই বাতি-ব্যাগ পৌঁছে দিতে চান।
শিউলি ভট্টাচার্য